পর্যাপ্ত ঘুম কেন জরুরি? জেনে নিন সুস্থ থাকার আশ্চর্য রহস্য
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ও মনে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই লেখায় জানুন কেন পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ থাকার জন্য এত জরুরি এবং ভালো ঘুমের আশ্চর্য উপকারিতা।
ভূমিকা:
আজকের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় আমরা প্রায়ই নিজের শরীর ও মনের প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলোকে উপেক্ষা করি। তার মধ্যে অন্যতম হলো পর্যাপ্ত ঘুম। অনেকেই মনে করেন, ঘুমে সময় নষ্ট হয়—কিন্তু বাস্তবে ঘুমই আমাদের শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে, মনকে প্রশান্ত করে এবং প্রতিদিনের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, ঘুম শুধু বিশ্রামের উপায় নয়, এটি শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পুনর্গঠনের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।
যারা দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুমান বা অনিয়মিত ঘুমের অভ্যাসে অভ্যস্ত, তারা ধীরে ধীরে নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হন—যেমন দুর্বল ইমিউনিটি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, এমনকি হৃদরোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
এই লেখায় আমরা জানবো পর্যাপ্ত ঘুম ঠিক কতটা জরুরি, ঘুমের অভাবে কী কী সমস্যা হতে পারে, এবং ভালো ঘুম নিশ্চিত করার সহজ ও কার্যকর কিছু উপায়। চলুন, ঘুমের এই আশ্চর্য রহস্য ও তার প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
Sleep Foundation. Topic: Why do we need sleep?
১. পর্যাপ্ত ঘুমের উপকারিতা:
ঘুম আমাদের শরীর ও মনের জন্য ঠিক কীভাবে উপকারী। যেমন:
(ক) শরীরের কোষ মেরামত:
পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের কোষগুলোকে মেরামত ও পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
(খ) স্মৃতিশক্তি বাড়ায়:
পর্যাপ্ত ঘুম মস্তিষ্ককে বিশ্রাম ও তথ্য সংরক্ষণে সাহায্য করে, ফলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং মনোযোগও উন্নত হয়।
(গ) ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে:
পর্যাপ্ত ঘুম দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, ফলে সহজে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমে।
(ঘ) মানসিক চাপ কমায়:
পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে এবং অনুভূতিকে স্থিতিশীল করে।
(ঙ) হরমোন ব্যালান্স রাখে:
পর্যাপ্ত ঘুম শরীরে হরমোনের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
(চ) হৃদযন্ত্র ভালো রাখে:
পর্যাপ্ত ঘুম হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
CDC – Centers for Disease Control and Prevention. Topic: How sleep affects health
২. পর্যাপ্ত ঘুম না বা ঘুমের অভাবে কী কী সমস্যা হতে পারে:
এখানে লিখবে যদি কেউ পর্যাপ্ত ঘুম না পায়, তাহলে কী কী ক্ষতি হয়:
(ক) ঘনঘন অসুস্থ হওয়া:
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা কমে যায় এবং ঘনঘন সর্দি-কাশি, জ্বর বা অন্যান্য সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিয়মিত কম ঘুম শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে তোলে, যার কারণে সহজেই অসুস্থ হওয়া শুরু হয়।
(খ) মাথা ঝিমঝিম করা:
মাথা ঝিমঝিম করা সাধারণত অতিরিক্ত চাপ, ঘুমের ঘাটতি, রক্তচাপের সমস্যা বা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে হতে পারে। কখনও কখনও এটি মাথাব্যথা, চোখে সমস্যা বা মানসিক চাপেরও লক্ষণ হতে পারে। যদি বারবার মাথা ঝিমঝিম করে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
(গ) ভুলে যাওয়ার প্রবণতা:
ভুলে যাওয়ার প্রবণতা অনেক সময় মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, অপুষ্টি বা অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে দেখা দিতে পারে। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বা ব্রেনের কোনও সমস্যার কারণে এমনটা হতে পারে। যদি নিয়মিতভাবে ছোটখাটো বিষয় ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়তে থাকে, তবে সেটা অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
(ঘ) ডিপ্রেশন বা উদ্বেগ:
ডিপ্রেশন বা উদ্বেগ মানসিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যা দীর্ঘদিন ধরে চাপ, হতাশা, একাকীত্ব, অথবা জীবনের কোন বড় পরিবর্তনের কারণে হতে পারে। এতে মন খারাপ থাকা, আগ্রহ হারানো, ঘুমের সমস্যা, ক্ষুধা পরিবর্তন এবং নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দেখা যায়। সময়মতো সঠিক সহায়তা না পেলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে, তাই প্রয়োজনে কাউন্সেলিং বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
NIH – National Institutes of Health. Topic: Sleep deprivation and deficiency
(ঙ) ওজন বৃদ্ধি:
ওজন বৃদ্ধি অনেক কারণে হতে পারে, যেমন অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা মানসিক চাপ। কখনও কখনও ওজন বাড়া হতে পারে থাইরয়েড সমস্যা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলেও। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
(চ) হার্টের সমস্যা:
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হার্টের উপর চাপ বাড়ে, যার ফলে রক্তচাপ ও স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়। এই অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে হার্টের সমস্যা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদস্পন্দনের অনিয়ম, এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই হৃদয়কে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম খুবই জরুরি।
৩. কোন বয়সে কত ঘণ্টা ঘুম জরুরি?
শিশুদের: ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমানো উচিত।
কিশোর: ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমানো উচিত।
প্রাপ্তবয়স্ক: ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমানো উচিত।
বৃদ্ধদের: ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমানো উচিত।
৪. ভালো ঘুমের জন্য করণীয় (ঘুমের নিয়ম ও টিপস)
Mayo Clinic. Topic: Sleep tips and disorders
(ক) প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো ও জাগা:
ভালো ঘুমের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জাগা অভ্যাস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক সঠিকভাবে কাজ করে, ঘুমের গুণমান ভালো হয় এবং মনও থাকে শান্ত। নিয়মিত ঘুমের রুটিন মানলে ঘুমাতে কম সময় লাগে এবং সকালে সহজে ঘুম ভাঙে, ফলে সারাদিন থাকে সতেজতা ও কর্মক্ষমতা।
(খ) ঘুমের আগে মোবাইল/টিভি বন্ধ রাখা:
ঘুমের আগে মোবাইল বা টিভি বন্ধ রাখা উচিত, কারণ এগুলোর স্ক্রিন থেকে বের হওয়া নীল আলো (blue light) মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ ব্যাহত করে, যা ঘুমের জন্য দায়ী। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয় এবং ঘুমের মানও খারাপ হয়। তাই ভালো ঘুমের জন্য ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে মোবাইল, টিভি বা অন্য স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ রাখা উচিত।
(গ) হালকা রাতের খাবার খাওয়া:
ভালো ঘুমের জন্য হালকা রাতের খাবার খাওয়া খুবই উপকারী। অতিরিক্ত ভারী বা তেল-ঝালযুক্ত খাবার রাতে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে, যার ফলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খেলে পেট আরামদায়ক থাকে এবং শরীর সহজে বিশ্রাম নিতে পারে, ফলে ঘুম হয় গভীর ও নিরবিচ্ছিন্ন।
(ঘ) ঘর ঠান্ডা ও শান্ত রাখা:
ভালো ঘুমের জন্য ঘর ঠান্ডা ও শান্ত রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঠান্ডা পরিবেশ মস্তিষ্ককে শিথিল করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ঘুমের গুণমান বাড়ায়। পাশাপাশি শান্ত পরিবেশে মন আরাম পায়, বাইরের শব্দ বা উত্তেজনা বিঘ্নিত করতে পারে না। তাই ঘুমের ঘর যতটা সম্ভব ঠান্ডা ও শান্ত রাখা উচিত।
(ঙ) ঘুমের আগে হালকা বই পড়া বা মেডিটেশন করা:
ঘুমের আগে হালকা বই পড়া বা মেডিটেশন করা ঘুম ভালো করার জন্য খুব উপকারী। এই অভ্যাসগুলো মনকে শান্ত করে, মানসিক চাপ কমায় এবং মস্তিষ্ককে বিশ্রামে সাহায্য করে। ফলে দ্রুত ঘুম আসে এবং ঘুম হয় গভীর ও প্রশান্তিদায়ক।
৫. কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?
নিয়মিত ঘুম না হওয়া বা ঘুমের সমস্যার কারণে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, তা জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো:
(ক) ঘুমানোর সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে:
যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত ভালো ঘুম না হয়, ঘুম আসতে প্রচুর সময় লাগে, অথবা রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায়, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
(খ) অতিরিক্ত ক্লান্তি ও মনোযোগ কমে গেলে:
ঘুমের অভাবের কারণে দিনের বেলায় খুব বেশি ক্লান্তি, একাগ্রতা কমে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া বা কাজের মধ্যে ভুলবার্ষিকতা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
(গ) ঘুমের সময় শ্বাসকষ্ট বা খিঁচুনি হলে:
ঘুমের সময় শ্বাসকষ্ট, হাঁচি, খিঁচুনি বা ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার (sleep apnea) মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে।
(ঘ) ঘুমের কারণে মানসিক অবস্থা খারাপ হলে:
ঘুমের সমস্যার ফলে বিষণ্নতা, উদ্বেগ বা ডিপ্রেশনের মতো মানসিক সমস্যা তৈরি হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি।
(ঙ) অনিয়মিত ঘুমের ফলে শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে:
যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস বা ঘনঘন অসুস্থ হওয়া হলে ঘুমের কারণ খতিয়ে দেখতে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
(চ) ঘুমানোর জন্য ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হলে:
ঘুম পেতে ওষুধ নিয়মিত নিতে হচ্ছে বা ওষুধ ছাড়া ঘুম হচ্ছে না, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
(ছ) ঘুমের সমস্যা কোনো দুর্ঘটনার কারণ হলে:
যদি ঘুমের অভাবে ঘুমের সময় হঠাৎ জেগে ওঠা বা চলাফেরার সময় অসাবধানতা বা দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া জরুরি।
সারাংশ:
যে কোনো ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ঘুমের সমস্যা বা ঘুমের কারণে শরীর-মন খারাপ হওয়া, শ্বাসকষ্ট, মানসিক অবস্থা খারাপ হওয়া বা দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা তৈরি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঘুমের সমস্যা ঊর্ধ্বে না গিয়ে যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা হয়, তত দ্রুত স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
উপসংহার:
পর্যাপ্ত ও গুণগত মানসম্পন্ন ঘুম আমাদের সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য। ঘুম শুধু শরীরকে বিশ্রাম দেয় না, এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কম ঘুম দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যা যেমন হৃদরোগ, ওজন বৃদ্ধি, ডিপ্রেশন এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাসের কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুমকে গুরুত্ব দিতে হবে। ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। সুস্থ ও দীর্ঘায়ু জীবনের জন্য ঘুমকে কখনো অবহেলা করা যাবে না।
“পর্যাপ্ত ঘুম কেন জরুরি? জেনে নিন সুস্থ থাকার আশ্চর্য রহস্য” বিষয়ক ৩০টি FAQ-এর প্রশ্ন ও উত্তর দিলাম:
১. পর্যাপ্ত ঘুম কী?
পর্যাপ্ত ঘুম বলতে প্রতিদিন শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় ঘুমের পরিমাণকে বোঝায়, যা সাধারণত ৭-৮ ঘণ্টা।
২. প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত?
বয়স্কদের জন্য সাধারণত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো ভালো। শিশুরা ও কিশোরদের বেশি ঘুম দরকার।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের কি প্রভাব পড়ে?
শরীর দুর্বল হয়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ওজন বাড়ে, ও মনোযোগ কমে যায়।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম কেন আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি?
ঘুম মানসিক চাপ কমায়, মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয় এবং ডিপ্রেশন ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
৫. ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের জন্য কী কাজ করে?
ঘুম মস্তিষ্ককে পুনরায় শক্তি জোগায়, স্মৃতি সংরক্ষণ করে ও শেখার ক্ষমতা বাড়ায়।
৬ পর্যাপ্ত ঘুম কিভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়?
ঘুমের সময় শরীরের ইমিউন সেল তৈরি ও সক্রিয় হয়, যা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কেন থাকে?
কম ঘুম হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং মেটাবলিজম ধীর হয়।
৮. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে কেন?
কম ঘুম উচ্চ রক্তচাপ ও প্রদাহ বাড়িয়ে হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ দেয়।
৯. পর্যাপ্ত ঘুম ও রক্তচাপের মধ্যে কি সম্পর্ক আছে?
ঘুম কম হলে রক্তচাপ বেড়ে যায়, যা হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
১০. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মানসিক চাপ বা ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে কেন?
ঘুম কমলে মস্তিষ্কের স্ট্রেস হরমোন বেশি নিঃসরণ হয়, যা মানসিক চাপ বাড়ায়।
১১. বাচ্চাদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম কেন বেশি জরুরি?
শিশুরা দ্রুত বৃদ্ধি পায় ও মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন।
১২. পর্যাপ্ত ঘুম কীভাবে আমাদের স্মৃতিশক্তি ও শেখার ক্ষমতা উন্নত করে?
ঘুমের সময় মস্তিষ্কে তথ্যগুলো সংরক্ষিত হয় এবং শেখার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
১৩. ঘুমের ঘাটতি কীভাবে কাজের দক্ষতা কমায়?
দেখাশোনা, ফোকাস ও সমস্যা সমাধানে ঘুমের অভাব বিঘ্ন ঘটায়।
১৪. পর্যাপ্ত ঘুম কিভাবে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে?
ঘুমের সময় ত্বকের কোষ পুনর্জীবিত হয় এবং ত্বক সতেজ থাকে।
১৫. ঘুমের অভাব আমাদের শারীরিক শক্তি ও সহনশীলতা কমায় কেন?
শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে শক্তি কমে যায় এবং সহনশীলতা হ্রাস পায়।
১৬. ঘুম কম হলে রোগ থেকে সুস্থ হতে সময় বেশি লাগে কেন?
ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
১৭. পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য কিভাবে ব্যাহত হয়?
ঘুম কমালে ক্ষুধা ও স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে।
১৮. ঘুমের অভাব কীভাবে হৃদস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাসকে প্রভাবিত করে?
ঘুম কম হলে হার্টের গতি বেড়ে যেতে পারে এবং শ্বাস নেওয়া দুর্বল হয়।
১৯. পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব কীভাবে শরীরের প্রদাহ বাড়ায়?
ঘুমের অভাবে শরীরের প্রদাহজনিত রাসায়নিক বেড়ে যায়, যা বিভিন্ন রোগের কারণ।
২০. রাতে সঠিক সময়ে ঘুমানো কেন জরুরি?
শরীরের স্বাভাবিক ঘুমের চক্র বজায় থাকে, ফলে ঘুমের মান ভালো হয়।
২১. ঘুমের গুণগত মান বাড়ানোর জন্য কি কি করণীয়?
নিয়মিত সময়ে ঘুমানো, মোবাইল-টিভি বন্ধ রাখা, হালকা খাবার খাওয়া ও শান্ত পরিবেশ তৈরি করা।
২২. মোবাইল বা টিভি ব্যবহার ঘুমের উপর কী প্রভাব ফেলে?
নীল আলো মেলাটোনিন হরমোন কমিয়ে ঘুম আসতে বাধা দেয়।
২৩. ঘুমের আগে ভারী খাবার খাওয়া কেন ক্ষতিকর?
হজমের সমস্যা হয় ও ঘুমের গুণগত মান খারাপ হয়।
২৪. রাতে বেশি ঘুম হলে কি সমস্যা হতে পারে?
অতিরিক্ত ঘুম ক্লান্তি ও মনোযোগ কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
২৫. ঘুম কম হলে স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি থাকে কি?
হ্যাঁ, দীর্ঘ সময় কম ঘুম মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি বাড়ায়।
২৬. কিভাবে ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে পুনর্নবীকরণ করে?
ঘুমের সময় মস্তিষ্ক থেকে বর্জ্য পদার্থ বের হয়ে যায় ও কোষ পুনর্জীবিত হয়।
২৭. ঘুম ও শারীরিক ব্যায়ামের সম্পর্ক কী?
পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে শক্তি দেয়, যা ব্যায়াম করার জন্য প্রয়োজন।
২৮. ঘুম কম হলে মনোযোগ কমে কেন?
ঘুম না হলে মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, তাই মনোযোগ কমে।
২৯. ঘুমের অভাব কিভাবে মনোভাব ও আচরণ পরিবর্তন করে?
ঘুম কম হলে সহজে রেগে যাওয়া, হতাশা ও অবসাদ দেখা দিতে পারে।
৩০. দীর্ঘমেয়াদী ঘুমের অভাব কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে?
হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক অসুস্থতা বাড়তে পারে।
আরো বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।