শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য অত্যন্ত জরুরি। এই গাইডে জানুন শিশুর বয়সভিত্তিক প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা, পুষ্টির উৎস ও পরিমাণ।
🔰 ভূমিকা:
শিশুরা একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ ও জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের শারীরিক বৃদ্ধি, মানসিক বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার মূল ভিত্তি হলো সঠিক পুষ্টি ও সুষম খাদ্য। জন্মের পর থেকেই শিশুর যত্নে পুষ্টিকর খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অনেক সময় বাবা-মায়েরা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না কোন বয়সে কোন খাবার শিশুর জন্য উপযুক্ত বা কীভাবে একটি সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করবেন।
এই লেখায় আমরা আলোচনা করবো শিশুদের বয়সভিত্তিক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, সুষম খাদ্য কীভাবে শিশুর শরীর গঠনে সাহায্য করে, এবং কোন কোন খাবার শিশুর দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। চলুন জেনে নিই আপনার সন্তানের সুস্থ ভবিষ্যৎ গড়ার পুষ্টিকর রোডম্যাপ।
আমরা আজকে এই ব্লগে আলোচনা করবো –
🔹১. শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা।
🔹২. শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান।
🔹৩. শিশুর খাবারে ভুল যেসব এড়ানো উচিত
🔹 ৪. শিশুর জন্য আদর্শ দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা:
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো:
🔹১. শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা:
🔹 শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
শিশুর পুষ্টির প্রয়োজন বয়স অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। প্রতিটি ধাপে তার শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদান দরকার হয়। নিচে বয়স অনুযায়ী একটি সহজ ও গাইডলাইনভিত্তিক খাদ্য তালিকা দেওয়া হলো:
🍼 ৬ মাস পর্যন্ত (মাত্র বুকের দুধ):
(শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য):
একমাত্র খাবার: মায়ের বুকের দুধ
বুকের দুধে শিশুর প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি থাকে
দিনে ৮–১২ বার বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত
কোনোভাবেই পানি, মধু, গুঁড়ো দুধ বা অন্য কিছু দেওয়া উচিত নয়
🍚 ৬ মাস থেকে ১২ মাস:
(শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য):
👉 বুকের দুধ চালিয়ে যেতে হবে + সম্পূরক খাবার দিতে হবে:
চালের মাড়, ডালের জল
সেদ্ধ করে পাতলা করে বানানো খিচুড়ি
আলু, মিষ্টি কুমড়ো, কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি সেদ্ধ করে ম্যাশ করে
মাশ করা কলা, আপেল, নাশপাতি
ডিমের কুসুম (৮ মাসের পর থেকে)
ছোটো করে থেঁতো করা রুটি/চালু
প্রচুর পরিমাণে পরিস্কার পানি
🍲 ১ থেকে ৩ বছর বয়স:
(শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য):
👉 এই বয়সে শিশু ধীরে ধীরে পরিবারের স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে পরিচিত হয়:
ভাত, ডাল, সবজি ও ডিম
দুধ, ছানা, পনির, ঘি
হালকা মসলা দেওয়া সবজি খিচুড়ি
মৌসুমি ফল (পাকা পেঁপে, কলা, আপেল, আম)
সেদ্ধ মুরগি, মাছ
রুটি/চাপাটি (নرم করে)
বাদাম বাটার, দই
দিনে অন্তত ৫ বেলা খাবার + ২ বেলা হালকা স্ন্যাকস
🥗 ৪ থেকে ৬ বছর বয়স:
(শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য):
👉 এই সময় শিশুর শরীরের সঙ্গে মস্তিষ্কের বিকাশ দ্রুত হয়:
সকালের নাশতায় ডিম, রুটি, দুধ
দুপুরে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ/মাংস
বিকেলে ফল, দই বা হালকা স্ন্যাকস
রাতে হালকা খাবার (খিচুড়ি, সবজি, রুটি)
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও ঘুম নিশ্চিত করতে হবে
🍱 ৭ থেকে ১২ বছর বয়স:
(শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য):
👉 এই বয়সে শিশুদের স্কুল, খেলা ও শেখার চাপ বাড়ে —এই সময় শিশুর সঠিক বৃদ্ধির প্রয়োজন তাই বেশি শক্তি ও মনোযোগের জন্য পুষ্টিকর খাবার দরকার:
প্রোটিন: ডিম, দুধ, মাছ, মুরগি, ডাল
কার্বোহাইড্রেট: ভাত, রুটি, আলু, সুজি
সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল
ক্যালসিয়াম: দুধ, দই, চিজ
আয়রন: পালং শাক, বিট, ডিম
বাদাম, ছোলা, কিশমিশ (বয়স অনুযায়ী)
দিনে ৫–৬ বার খাওয়াতে হবে (৩ বেলা প্রধান খাবার + ২–৩ বেলা হালকা খাবার)
🔹 ২. শিশুর পুষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান:
শিশুর শরীর ও মস্তিষ্কের সুস্থ বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে কিছু প্রধান পুষ্টি উপাদান প্রতিদিনের খাদ্যে থাকা আবশ্যক। নিচে প্রতিটি উপাদান, তার উপকারিতা ও উৎসসহ বিস্তারিত দেওয়া হলো:
✅ ১. প্রোটিন (Protein):
উপকারিতা:
শরীরের কোষ গঠন ও মেরামত করে
পেশি গঠনে সহায়ক
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
উৎস:
ডিম, দুধ, ছানা
ডাল, মুগডাল
মাছ, মুরগির মাংস
বাদাম, সয়াবিন
✅ ২. কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrate):
উপকারিতা:
শক্তির প্রধান উৎস
শিশুদের খেলাধুলা ও সক্রিয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে
উৎস:
ভাত, রুটি
আলু, মিষ্টি আলু
সুজি, সেমাই, শস্যদানা
✅ ৩. চর্বি (Fat):
উপকারিতা:
মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে
দেহে ভিটামিন শোষণে সাহায্য করে
উৎস:
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
বাদাম ও তেলবীজ
সরিষার তেল, নারকেল তেল, ঘি (পরিমিত পরিমাণে)
✅ ৪. ভিটামিন (Vitamins):
উপকারিতা:
রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়
চোখ, ত্বক, হাড়, রক্ত ও স্নায়ুর কার্যক্রমে সহায়তা করে
উৎস:
সবুজ শাকসবজি (ভিটামিন A, C, K)
ফলমূল (কমলালেবু, পেঁপে, আম)
ডিমের কুসুম (ভিটামিন D)
✅ ৫. খনিজ লবণ (Minerals):
উপকারিতা:
হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে
রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে
নার্ভ ও পেশি শক্তি জোগায়
উৎস:
ক্যালসিয়াম: দুধ, দই, চিজ
আয়রন: পালং শাক, বিট, কিশমিশ
জিঙ্ক: মাছ, ডিম, বাদাম
✅ ৬. জল/পানি (Water):
উপকারিতা:
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
খাবার হজমে সাহায্য করে
ডিহাইড্রেশন রোধ করে
উৎস:
পরিষ্কার পানি
ফলের রস (বাড়িতে তৈরি, চিনি ছাড়া)
তরল খাবার: স্যুপ, দুধ, ডাল
🔹৩. শিশুর খাবারে ভুল যেসব এড়ানো উচিত:
শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য খাদ্যে যে ভুলগুলো এড়ানো উচিত:
শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে যেমন পুষ্টিকর খাবার দরকার, তেমনি কিছু সাধারণ ভুল এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলগুলো শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করে।
❌ ১. একই ধরনের খাবার বারবার দেওয়া:
অনেক বাবা-মা শিশুকে শুধু পছন্দের খাবার (যেমন: শুধু সুজি বা কলা) বারবার দেন।
এর ফলে শিশুর পুষ্টির বৈচিত্র্য নষ্ট হয় এবং কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান ঘাটতি হয়।
✅ সমাধান:
বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, প্রোটিন ও শস্য মিলিয়ে খাদ্য দিন।
❌ ২. জাঙ্ক ফুড ও প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ানো:
চিপস, কুকিজ, চকোলেট, কোলা বা জুস ড্রিংক ইত্যাদি অতিরিক্ত শর্করা ও ট্রান্স ফ্যাটে ভরপুর।
এগুলো শিশুর ওজন বাড়াতে পারে কিন্তু পুষ্টি দেয় না।
✅ সমাধান:
ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস দিন, যেমন: ফলের চাট, দই-ফল মিশ্রণ, খিচুড়ি ইত্যাদি।
❌ ৩. খাওয়াতে গিয়ে জোর করা বা ভয় দেখানো:
শিশুকে জোর করে খাওয়ালে সে খাওয়ার প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করতে পারে।
মানসিকভাবে প্রভাব পড়ে, খাবার সময় অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
✅ সমাধান:
শিশুকে খেলাচ্ছলে বা গল্পের মাধ্যমে খাওয়ান, ধৈর্য ধরুন।
❌ ৪. পর্যাপ্ত পানি না খাওয়ানো:
অনেক সময় শিশুরা খেতে চায় না বা পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে না।
এতে হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
✅ সমাধান:
মাঝেমধ্যে ফলের রস বা লেবু পানি দিয়ে পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।
❌ ৫. নিয়মিত খাবারের সময় না মানা:
এলোমেলো সময়ে খাওয়ালে হজমের সমস্যা হয় এবং ক্ষুধা কমে যায়।
✅ সমাধান:
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী খাবার দিন — নাশতা, দুপুর, রাত ও স্ন্যাকস।
❌ ৬. খাবারে প্রয়োজনের বেশি চিনি বা লবণ ব্যবহার:
অতিরিক্ত চিনি দাঁতের ক্ষতি করে এবং ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
✅ সমাধান:
প্রাকৃতিক স্বাদে শিশুদের অভ্যস্ত করুন — যেমন ফল, দই, সবজির নিজস্ব স্বাদ।
🔹 ৪. শিশুর জন্য আদর্শ দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা:
✅ লক্ষ্য: সহজে হজম হয়, পুষ্টি সমৃদ্ধ, শিশুর স্বাদ অনুযায়ী ভারসাম্যপূর্ণ ও আকর্ষণীয়
🌞 সকালের নাশতা (সকাল ৭–৮টা)
দুধ (১ গ্লাস)
সিদ্ধ ডিম/অমলেট
রুটি বা সুজি খিচুড়ি
কলা বা পাকা পেঁপে
🟩 পুষ্টির উৎস: প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, শক্তি
🍎 সকালবেলা হালকা স্ন্যাকস (সকাল ১০টা)
ফলের চাট (আপেল, নাশপাতি, পেঁপে)
সামান্য বাদাম বা কিশমিশ (৩–৪ বছরের বেশি হলে)
১ কাপ জল বা ফলের রস (চিনি ছাড়া)
🟩 পুষ্টির উৎস: ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার
🍛 দুপুরের খাবার (দুপুর ১–২টা)
ভাত বা রুটি
মুগ/মসুর ডাল
সেদ্ধ বা হালকা ভাজা সবজি (লাউ, পুঁই, মিষ্টি কুমড়া)
মাছ/ডিম/মুরগির ঝোল
অল্প ঘি বা সরষের তেল
🟩 পুষ্টির উৎস: কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন
🍶 বিকেলের নাশতা (বিকেল ৫টা)
দই + পাকা কলা
বিস্কুট (হোমমেড বা লো-সুগার)
সেমাই বা চিড়ার পায়েস (সাধারণ মিষ্টি)
🟩 পুষ্টির উৎস: ক্যালসিয়াম, প্রোবায়োটিকস, হালকা শক্তি
🌙 রাতের খাবার (রাত ৮টা)
নরম রুটি বা সামান্য ভাত
সবজি খিচুড়ি / সবজি ঝোল
ডিম ভুনা / সেদ্ধ মাছ
এক গ্লাস হালকা গরম দুধ (রাত ঘুমানোর আগে)
🟩 পুষ্টির উৎস: হালকা প্রোটিন, মিনারেল, হজমে সহায়ক
⚠️ অতিরিক্ত টিপস:
দিনে অন্তত ৫ বেলা খাবার দিন (৩ বেলা প্রধান + ২ বেলা স্ন্যাকস)
খাবারে বৈচিত্র্য রাখুন, যেন শিশু একঘেয়েমি না বোধ করে
প্রতি খাবারে রঙিন সবজি ও ফল যুক্ত রাখলে আকর্ষণ বাড়ে
খাবারের সঙ্গে গল্প, রঙিন প্লেট ও উৎসাহ শিশুকে উৎসাহী করে
🔚 উপসংহার:
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা একটি দায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। জন্মের পর থেকেই প্রতিটি ধাপে শিশুদের পুষ্টির চাহিদা ভিন্ন হয় এবং সে অনুযায়ী খাদ্য তালিকা পরিকল্পনা করাটা জরুরি। মায়ের দুধ থেকে শুরু করে ফল, সবজি, দুধ, ডিম, শস্য, মাছ ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান প্রতিদিনের খাদ্যে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
একইসঙ্গে, অতিরিক্ত চিনি, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অপ্রয়োজনীয় খাবার এড়িয়ে চলা শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে। খাবারের স্বাদ ও বৈচিত্র্য বজায় রেখে শিশুকে ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত করানোই ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলে।
স্মরণ রাখতে হবে—একটি সুস্থ, হাসিখুশি ও বুদ্ধিদীপ্ত শিশুর পেছনে থাকে যত্নবান অভিভাবকের সচেতন পুষ্টি পরিকল্পনা।
📌 শিশুর পুষ্টি ও খাদ্যতালিকা: ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQ):
1. শিশুর সুষম খাদ্য বলতে কী বোঝায়?
➤ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ভিটামিন, মিনারেল ও পানি – এই ছয়টি উপাদানযুক্ত খাবারই শিশুদের সুষম খাদ্য।
2. ৬ মাসের শিশুর জন্য উপযুক্ত খাবার কী?
➤ ৬ মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ। এরপর চালের মাড়, ডালের জল, ম্যাশ করা ফল ও সেদ্ধ সবজি দেওয়া যায়।
3. শিশুকে চিনি বা লবণ দেওয়া কি ঠিক?
➤ ১ বছরের নিচে শিশুদের অতিরিক্ত চিনি ও লবণ এড়িয়ে চলাই ভালো।
4. কোন বয়সে শিশুকে ডিম খাওয়ানো শুরু করা উচিত?
➤ ৮ মাসের পর থেকে সেদ্ধ ডিমের কুসুম দেওয়া যায়, তবে সাদা অংশ ১ বছর পর।
5. দুধ ছাড়া শিশুদের ক্যালসিয়ামের উৎস কী হতে পারে?
➤ দই, ছানা, পনির, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি।
6. শিশু দিনে কয়বার খাওয়া উচিত?
➤ দিনে অন্তত ৫ বার – ৩ বেলা প্রধান খাবার, ২ বেলা হালকা খাবার কারণ এই সময় শিশুর সঠিক বৃদ্ধি হয়।
7. শিশুর ওজন কম হলে কী ধরনের খাবার দেওয়া উচিত?
➤ প্রোটিন ও ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার: ডিম, ঘি, দুধ, মাছ, আলু, কলা, সয়াবিন।
8. খাবার না খেতে চাইলে কী করবেন?
➤ জোর না করে খেলাচ্ছলে, গল্প করে বা রঙিন পাত্রে খাবার দিন।
9. শিশুর জন্য কোন ফল সবচেয়ে উপকারী?
➤ পাকা কলা, আপেল, পেঁপে, আম, জাম – সহজে হজম হয় এমন ফল উপকারী।
10. শিশুকে শুকনো ফল দেওয়া কি ঠিক?
➤ হ্যাঁ, তবে কুচি করে ও বয়স অনুযায়ী সীমিত পরিমাণে দিতে হবে।
11. ১ বছরের শিশুর জন্য আদর্শ খাদ্যতালিকা কেমন?
➤ দুধ, ভাত, ডাল, সবজি, ডিম, ফলমূল ও পর্যাপ্ত পানি – প্রতিদিনের খাদ্যে থাকা উচিত।
12. শিশুর পানি পানের অভ্যাস গড়বেন কীভাবে?
➤ খাবারের মাঝে মাঝে অল্প পানি দিন, ফলের রস দিয়ে উৎসাহিত করুন।
13. শিশুকে নরম খাবার দেওয়া কি সব সময় দরকার?
➤ ছোট বয়সে হ্যাঁ, তবে বয়স অনুযায়ী ধীরে ধীরে শক্ত খাবারে অভ্যস্ত করা উচিত।
14. বিকেলের নাশতায় শিশুকে কী দেওয়া যায়?
➤ ফল, দই, খিচুড়ি, হালকা পায়েস, হোমমেড বিস্কুট।
15. শিশুর ক্ষুধা কমে গেলে কী করবেন?
➤ নিয়মিত খাওয়ার সময় মেনে চলুন, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন, হালকা ব্যায়ামে উৎসাহ দিন।
16. শিশুদের জন্য কোন খাবার ঝুঁকিপূর্ণ?
➤ অতিরিক্ত চিনি, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কোমল পানীয়।
17. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোন খাবার ভালো?
➤ ফলমূল, শাকসবজি, দই, ডিম, ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার।
18. শিশুকে স্ন্যাকস কতটুকু দেওয়া উচিত?
➤ ২ বেলা হালকা স্ন্যাকস যথেষ্ট, তবে তা স্বাস্থ্যকর হতে হবে।
19. গরম খাবার না খেলে সমস্যা হবে?
➤ না, তবে খাবার যেন ঠান্ডা বা বাসি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
20. শিশুর ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের জন্য কী খাবার দরকার?
➤ ডিম, মাছ, বাদাম, দুধ, ঘি, ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার।
21. কোন বয়সে শিশুকে পরিবারের খাবার দেওয়া যায়?
➤ ১ বছর পর থেকে ধীরে ধীরে পরিবারের হালকা খাবারে অভ্যস্ত করা যায়।
22. শিশুর জন্য কি গরুর দুধ উপযুক্ত?
➤ ১ বছরের পর থেকে ধীরে ধীরে দেওয়া যায়।
23. মধু কি শিশুদের দেওয়া যায়?
➤ এক বছরের নিচে শিশুদের কখনোই মধু দেওয়া উচিত নয়।
24. শিশুর খাবারে ঘি দেওয়া ঠিক কি না?
➤ হ্যাঁ, তবে পরিমিতভাবে। এটি ওজন ও শক্তি বাড়াতে সহায়ক।
25. খাবারের সময় টিভি দেখা কি ক্ষতিকর?
➤ হ্যাঁ, এতে শিশুর খাওয়ার অভ্যাস ও মনোযোগ দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
26. শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কোন খাবার দেওয়া উচিত?
➤ পাকা পেঁপে, ভুট্টা, শাক, পানি ও ফলমূল বেশি দিতে হবে।
27. বাচ্চারা খাবারে কান্নাকাটি করলে কী করবেন?
➤ ধৈর্য ধরে খেলার মাধ্যমে খাওয়ানোর অভ্যাস গড়তে হবে কারণ এই সময় শিশুর সঠিক বৃদ্ধির খুবই প্রয়োজন।
28. শিশুর দুধ খেতে না চাইলে কী করবেন?
➤ দুধ দিয়ে সেমাই, পায়েস বা দই তৈরি করে দেওয়া যায়।
29. শিশুর দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কোন খাবার ভালো?
➤ দুধ, চিজ, সবজি ও ফলমূল দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং শিশুর সঠিক বৃদ্ধি হয়।
30. শিশুর খাবারে কীভাবে বৈচিত্র্য আনা যায়?
➤ রঙিন ও আকর্ষণীয় পরিবেশন, নতুন নতুন খাবারের স্বাদ ও মজার গল্পে খাওয়ানো কারণ এই সময় শিশুর সঠিক বৃদ্ধির খুবই জরুরী।